অধিক ঝুঁকিপূর্ণ দেশে নিরাপদভাবে তথ্য সংগ্রহ
এটা দুঃখজনক হলেও সত্য যে, মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিকগণ প্রায়ই সরকারের রোষানলে পড়েন।
এই সাহসী ও আন্তরিক মানুষদের যেহেতু সেই দেশেই মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমাদের তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হতে বলি, তাদের পরিচয়ের গোপনীয়তা ও এইচআরএমআই’র তথ্য সংগ্রহের ফলে তৈরী হওয়া অতিরিক্ত ঝুঁকি প্রশমন আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আপনি যদি আপনার দেশে আমাদের তথ্য সংগ্রহে সম্পৃক্ত হতে চান, তবে আমরা আপনাকে জানাতে চাই যে, আপনার নিরাপত্তাকে আমরা খুবই গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করি।
এইচআরএমআই দুইধরণের সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহ করে, এবং এই তথ্য নিরাপদভাবে সংগ্রহ এবং সংরক্ষণের জন্য আমরা একটি সুস্পষ্ট প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছি।
আপনার পরিচয় সংক্রান্ত তথ্য আমরা নিরাপত্তার সহিত সংরক্ষণ করি।
প্রথম প্রকার সংবেদনশীল তথ্য হচ্ছে জরিপে সম্ভাব্য অংশগ্রহণকারীর নাম ও যোগাযোগের ঠিকানা। আমরা এগুলো এসএসএল সার্টিফিকেট এবং এইচটিটিপিএস দ্বারা সুরক্ষিত ওয়েবসাইটের একটি অনলাইন ফরম এর মাধ্যমে সংগ্রহ করি। এর অর্থ হলো, আপনার নাম ও যোগাযোগের ঠিকানা অনলাইনে আনা-নেয়ার সময়ে এনক্রিপ্টেড থাকে।
এই এনক্রিপ্টেড তথ্য আমাদের ক্লায়েন্ট রিলেশনশীপ ম্যানেজমেন্ট (সিআরএম) সফটওয়্যারে পাঠানো হয়। সিআরএম-টি আইএসও এর সর্বোচ্চ নিরাপত্তা মানদন্ড দ্বারা সনদপ্রাপ্ত। এতে করে সকল তথ্য এনক্রিপ্টেড অবস্থায় সংগ্রহ, ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ নিশ্চিত হয়। এই তথ্যসমূহে প্রবেশাধিকার নিউজিল্যান্ডে অবস্থানরত এইচআরএমআই’র ছোট একটি টিমের নিকটে সীমিত এবং শুধুমাত্র জরিপের লিংক পাঠানোর জন্য তা ব্যবহার করা হয়।
আমরা আপনার জরিপের উত্তর বেনামীকরণ করি।
দ্বিতীয় যে ধরণের সংবেদনশীল তথ্য আমরা সংগ্রহ করি, সেটি হচ্ছে বিশেষজ্ঞ জরিপের উত্তর। পুনশ্চ, আমরা এগুলো এসএসএল সার্টিফিকেট এবং এইচটিটিপিএস দ্বারা সুরক্ষিত একটি অনলাইন সফটওয়্যারের মাধ্যমে সংগ্রহ করি, যা জরিপে প্রাপ্ত সকল তথ্য এনক্রিপ্টেড করে থাকে।
না আমরা, না অন্যকেউ জানতে পারে যে কার নিকট হতে কোন তথ্য এসেছে।
না আমরা, না অন্যকেউ জানতে পারে যে কার নিকট হতে কোন তথ্য এসেছে। এছাড়াও জেনিরিক রূপে এবং ওয়েবসাইটে প্রকাশের পুর্বে অধিকতর সংবেদনশীল তথ্য মুছে ফেলার প্রক্রিয়া আমরা রেখেছি।
আমরা নিয়মিত সিকিউরিটি অডিট করি।
যেকোনো ধরণের নিরাপত্তা হুমকি, নিরাপত্তার লঙ্ঘন, এবং সাইবার আক্রমণ যা আমাদের জরিপে সম্ভাব্য অংশগ্রহণকারীর নিরপাত্তা এবং আমাদের সুনাম ক্ষু্ণ্ণ করতে পারে, তা থেকে বাচঁতে আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করি। আমাদের সিস্টেম ঠিকমতো কাজ করছে কিনা এবং আমরা সবোৎকৃষ্ট পন্থার সাথে তাল মিলিয়ে চলছি কিনা, তা পরখ করার জন্যে আমরা তৃতীয়-পক্ষ কন্ট্রাক্টর নিয়োগ করে থাকি। আমরা নিরাপত্তা ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন। একাধিক প্রাতিষ্ঠানিক অডিটের মধ্যেকার সময়ে আমরা নিয়মিত টিম মিটিং করি যেখানে, পাসওয়ার্ডের সিকিউরিটির জন্য করণীয় বিষয় ও এরকম অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলাপ হয়। এবং আমরা চেষ্টা করি যাতে করে সবাই এর গুরুত্ব অনুধাবন করে।
আমাদের জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ঝুঁকি কী কী?
সামগ্রিকভাবে, আপনার জন্য সবচেয়ে বড় যে ঝুকির আশংকা আমরা করি তাহলো, কেউ আপনার ইমেইল হ্যাক করেছে কিনা এবং আপনি এইচআরএমআই এর জরিপের লিংক পেয়েছেন সেটি দেখতে পারছে কিনা। এর ফলে, প্রতিকূল সরকার জেনে যেতে পারে যে আপনি আমাদের মানবাধিকার ম্যাট্রিক্সে কিভাবে সহায়তা করছেন।
নিজেকে অনলাইন নজরদারি থেকে বাঁচানোর কিছু টিপস
জরিপের সম্ভাব্য অংশগ্রহণকারী যারা ঝুঁকির মুখোমুখি হওয়ার বিষয়ে সচেতন, তারা কিভাবে অনলাইনে নিজেদের তৎপরতা লুকিয়ে রাখবেন, সেই ব্যাপারে কিছু তথ্য এখানে দেয়া হলো।
আপনার আইপি এড্রেস লুকিয়ে রাখুন
আপনার অনলাইন কার্যকলাপ নিরাপদ রাখতে আইপি (আপনার ফোন অথবা কম্পিউটারের অনন্য ইন্টারনেট ঠিকানা) এড্রেস লুকিয়ে রাখার দুইধরণের পন্থা রয়েছে :
- নানান ভিপিএন (ভারচূয়াল প্রাইভেট নেটওয়াকসমূহ)
ভিপিএন আপনার নিজের আইপি থেকে ভিন্ন একটি পাবলিক আইপি এড্রেস সরবরাহ করে থাকে।
ভিপিএন আপনার পুরো ডিভাইসটিই নিরাপদ রাখতে পারে, আপনার ব্রাউজারের ট্রাফিকই শুধু নয়, এর সাথে অন্যান্য যেসকল প্রোগাম ইন্টারনেট ব্যবহার করে (যেমন ডেক্সটপের ইমেইল ক্লায়েন্ট) সেটিও সুরক্ষিত রাখে। আবার কিছু ভিপিএন আছে যেগুলো ব্যবহার করাও ঝুঁকিপূর্ণ।
• কিছু ফ্রি অপশন হলো প্রোটন ভিপিএন,টানেলবিয়ার(৫০০ এমবিতে সীমাবদ্ধ),হাইডমি(১০ জিবিতে সীমাবদ্ধ)।
কিছু পেইড অপশন হলো: এক্সপ্রেস ভিপিএন,নর্ড ভিপিএন,সার্ফশার্ক।
এটা বলে রাখা ভালো যে, কোনো কোনো দেশ ভিপিএনের ব্যাাপারে খুবই খুঁতখুতে এবং ডাউনলোড করার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি করে থাকে, অনেক ক্ষেত্রেঅবৈধ হিসেবে গণ্য করে।
আপনি বিভিন্ন ধরণের ভিপিএনসমূহ এখানে এবং এখানে তুলনা করে দেখতে পারেন।
- টর ব্রাউজার
টর ব্রাউজার একটি ফ্রি প্রোগাম যা আপনি আপনার কম্পিউটারে ডাউনলোড করতে পারেন।
এটি আপনাকে টর সফটওয়্যার ব্যবহার করতে সাহায্যে করবে, যা আপনার ইন্টারনেট কার্যকলাপ ট্র্যাক করা কঠিন করে দেয়। বিশ্বব্যাপী স্বেচ্ছাসেবকদের দ্বারা পরিচালিত নেটওয়ার্ক রিলের মাধ্যমে এটি করা হয়।
ব্যক্তিগত ওয়াইফাই ব্যবহার করুন।
পাবলিক ওয়াইফাই স্পট ব্যবহার করা ঝুঁকিপূর্ন। নিরাপদ উপায় হচ্ছে, আপনার মোবাইলে যদি ভাল ডাটা প্লান থাকে (অথবা আপনার দেশে বৈধ পকেট ওয়াইফাই থাকে), তাহলে আপনার মোবাইল ফোন থেকে একটি হটস্পট বানিয়ে ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটারে সংযুক্ত হতে পারেন। পাসওয়ার্ড এনাবল নিশ্চিত করুন, যাতে অন্য্ কেউ আপনার অনুমতি ব্যতিরেকে আপনার ডেটা ব্যবহার না করতে পারে, এবং আপনার কাজ শেষ হলে হটস্পট বন্ধ করে দিতে ভুলবেন না।
স্মার্ট সার্চ
আপনি যখন ইন্টারনেট ব্যবহার করেন, অধিকাংশ ব্রাউজার (যেমন ক্রোম, সাফারি, ফায়ারফক্স, এক্সপ্লোরার এবং অন্যান্য) ইন্টারনেটে আপনি কী খুঁজছেন এবং কোথায় যাচ্ছেন সেটা ট্র্যাক করে।
যখন আপনি সংবেদনশীল কোনো কিছু করছেন, আপনার ব্রাউজারকে ’প্রাইভেট’ অথবা ‘ইনকগ্নিটো’ মুডে সেট করে রাখুন, এবং নিরাপদ সার্চ ইন্জিন ব্যবহার করুন (যেমন ডাকডাকগেো) যা আপনার তথ্য ও ব্রাউজার হিস্টোরি সংগ্রহ করে না।
আরেকটি টিপস হলো কাজ শেষে আপনার ব্রাউজার থেকে ’কুকিজ’ মুছে ফেলা। কুকিজ হলো আপনি যে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে সম্পৃক্ত হচ্ছেন তার তথ্য সম্বলিত ছোট টেক্সট ফাইল যেটা আপনার ওয়েব ব্রাউজারে জমা থাকে। প্রত্যেক ব্রাউজারের ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে কুকিজ পরিস্কারের ব্যবস্থা রয়েছে (’clear cookies Safari’ অথবা এরকম কিছু একটা লিখে সার্চ করুন), যেটা আপনি সহজেই অনলাইন থেকে জানতে পারবেন। ক্রোমের জন্য নির্দেশিকা এখানে পাবেন।
বেনামী ইমেইল ব্যবহার করুন।
এইচআরএমআই’র সাথে যোগাযোগের সময় একটি পৃথক বেনামী ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার করে নিজেকে নিরাপদ রাখা হচ্ছে উত্তম পন্থা।
এরকম অনেক সেবা রয়েছে, তন্মধ্যে প্রোটনমেইল একটি। এই সেবাসমূহ ব্যবহারে পূর্বে আপনার ব্রাউজার প্রাইভেট মোডে (উপরে দেখুন) নিয়ে যান। এগুলো সেটআপ করার সময় আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
সাধারণ উত্তম আচরণবিধি
আপনার ডিভাইসসমূহে উত্তম সাইবার হাইজিন নিশ্চিত করুন। (ফোন এবং কম্পিউটার উভয়েই)
শুধুমাত্র বিশ্বস্ত ডিভাইসসমূহ ব্যবহার করুন, যেগুলোর সাইবার হাইজিন ব্যবস্থাপনা ভালো। লেটেস্ট ভার্সনের অপারেটিং ও অ্যাপস ব্যবহার ও আপডেট নিশ্চিত করুন।
স্ট্যান্ডার্ড পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
সকল সময় রুম থেকে বের হওয়ার পূর্বে স্ক্রিনলক করুন। আপডেট আসার সাথে সাথেই সফটওয়্যার ও অ্যাপস যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি আপডেট করুন। আকস্মিক আপনার তথ্য অন্য কারো কাছে উন্মুক্ত হওয়া রুখতে অ্যাপস বন্ধ করা ও লগ অফ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
’শোল্ডার-সার্ফারদের’ এড়িয়ে চলুন।
’শোল্ডার-সার্ফার’ হলো সে ব্যক্তি যে তথ্য সংগ্রহের জন্য, আপনি কাজ করার সময় আপনার কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকে। আপনার তথ্য নিরাপদ রাখতে আপনি দেয়াল পিছনে রেখে বসতে পারেন, অথবা সম্ভাব্য ব্যক্তি থেকে আপনার স্ক্রিন সরিয়ে নিন।
এন্টিভাইরাস নিরাপত্তা ব্যবহার করুন।
এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ইনস্টল করা রয়েছে, নিশ্চিত করুন।
মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন এবং পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করুন।
আপনার তথ্য নিরাপদ রাখার দুইটি পন্থা হলো:
- মাল্টি ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন। এটি হলো যেখানে বিভিন্ন সেবা আপনার পাসওয়ার্ড চায় যেমন আপনার ইমেইল এবং তার সাথে আপনার ফোন অথবা অথেনটিকেশন অ্যাপে পৃথক একটি কোড পাঠায়। এসএমএস/টেক্সট ভিত্তিক মাল্টি-ফ্যাকট্র অথেনটিকেটর এর তুলনায় আমরা স্মার্ট ফোন অ্যাপস ভিত্তিক অথেনটিকেটর যেমন গুগল অথেনটিকেটর অথবা লাস্টপাস অথেনটিকেটর ব্যবহার করার সুপারিশ প্রদান করছি। অনেক সেবা প্রদানকারী একাউন্ট খোলার সময় আপনাকে জিজ্ঞেস করবে, আপনি এই অপশনটি চালু করতে চান কিনা। আমাদের পরামর্শ হলো, যেখানেই এই ফিচার থাকবে, সেখানে আপনি তা চালু করে নিন।
- পাসওয়ার্ড ম্যানেজার যেটি ব্যবহার করলে মনে না রেখেও আপনি জটিল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে পারবেন।
আমাদের নিরাপত্তা পলিসি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে, অনুগ্রহপূর্বক এখানে ক্লিক করুন। এই টিপসগুলোর একটি সারসংক্ষেপ ফ্রন্ট লাইন ডিফেন্ডারস ও সরবরাহ করে।
If you have any other security questions or concerns, please contact us.